ঢাকা
,
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
৪ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কার্গো ভিলেজের আগুন
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা : প্রধান উপদেষ্টা
মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কাজ হারাবেন ২ লক্ষাধিক জেলে
আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে ঢুকেছি: শেষ জাহাজ আটকের আগে ভিডিও বার্তায় শহিদুল
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের নিন্দায় বাংলাদেশ
ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৬০
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে তীব্র যানজট
প্রতিশোধ নিলে আমার ওপর নিন, কর্মীদের ছুঁবেন না’ : থালাপতি বিজয়
প্যারিস ফ্যাশন উইকে আলোচনায় ঐশ্বরিয়া
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি দপ্তরে শাটডাউন, ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে লাখো কর্মী
সাংবাদিক রুহুল আমীন গাজী ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর
-
স্টাফ রিপোর্টার - আপডেট সময় ০৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- ২২ বার পড়া হয়েছে
প্রখ্যাত সাংবাদিক নেতা মরহুম রুহুল আমীন গাজী স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি এ পেশার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিচ্ছে। রুহুল আমীন গাজী ছিলেন সাংবাদিকদের ঐক্যের প্রতীক। আমৃত্যু তিনি সাংবাদিক সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। পতিত ফ্যাসিস্ট-স্বৈরাচার তাকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছিল। কিন্তু তিনি কখনোই অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। তার আত্মত্যাগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে বিএফইউজে-ডিইউজের যৌথ উদ্যোগে রুহুল আমীন গাজীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। ডিইউজে সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, বিএফইউজে মহাসচিব ও পেশাজীবী পরিষদের নেতা কাদের গনি চৌধুরী, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, ড. মাহবুব হাসান, সরদার ফরিদ আহমদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী ও ইলিয়াস হোসেন, পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা মেইলের নির্বাহী সম্পাদক হারুন জামিল, সিনিয়র সাংবাদিক মোদাব্বের হোসেন, রফিক মোহাম্মদ, আবু বকর, দিদারুল আলম, শাহনাজ পলি, লাবিন রহমান প্রমুখ।
পরিবারের পক্ষ থেকে রুহুল আমীন গাজীর একমাত্র পুত্র আফফান আবরার ইবনে আমীন বক্তব্য দেন। সাংবাদিক নেতা খুরশীদ আলম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
হাসান হাফিজ বলেন, রুহুল আমীন গাজী নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তিনি শুধু সাংবাদিক হিসেবেই নয়, নেতা হিসেবেও দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, রুহুল আমীন গাজী ছিলেন নির্যাতিত ও মজলুম সাংবাদিক। ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে তাকে বিনা বিচারে, বিনা অপরাধে ১৮ মাস কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। সে সময় তাকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বহু সাংবাদিক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেছিলেন, কিন্তু রুহুল আমীন গাজী কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। গণতন্ত্র রক্ষায় আজীবন সামনের সারি থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, রুহুল আমীন গাজী সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হিসেবে কাজ করেছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পেছনে কে আছেন দেখতেন না। সবসময় সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতেন। তিনি বলেন, রুহুল আমীন গাজী ছিলেন সৎ, নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিকতার প্রতীক। সাংবাদিকতা জীবনে তিনি কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেননি। সাহসী সাংবাদিকতা চর্চায় তার অবস্থান ধরে রাখায় সাংবাদিকদের কাছে আদর্শ ছিলেন তিনি।
রুহুল আমীন গাজীর কর্মময় জীবন তুলে ধরে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, তিনি জাতিকে বহু সেবা দিয়েছেন। তিনি সংবাদকর্মীদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন নিরলসভাবে। তিনি যোগ্যতার সঙ্গে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে তার কোনো বিকল্প ছিল না। ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়ের বিরোধিতা করে কারাবরণ করতে হয়েছে বরেণ্য এই সাংবাদিককে। তবু তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পিছপা হননি।
সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, রুহুল আমীন গাজী মানুষ হিসেবে সজ্জন ছিলেন। আপাদমস্তক একজন সাংবাদিক হিসেবে সব সময় সত্যের পক্ষে কথা বলার সাহস জুগিয়েছেন তিনি।
কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, রুহুল আমীন গাজী মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পেছনে কে আছেন সেটি খেয়াল রাখেননি। সবসময় সাহস নিয়ে চলেছেন। সাংবাদিকদের যেকোনো দাবি আদায়ে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন।
সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, রুহুল আমীন গাজী সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করেছেন। অনেকেই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেন। কিন্তু তিনি কোনোদিনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। রাজপথে কলমে সবসময় তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন বলেন, রুহুল আমীন গাজীর শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়। তিনি এমন এক সময় চলে গিয়েছেন যখন তার প্রয়োজন ছিল।
মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, রুহুল আমীন গাজী দেশের গণমাধ্যমে সাহসী ভূমিকা এবং সাংবাদিকতা পেশায় অনন্য অবদান রেখেছেন। সততা, বিশ্বস্ততা এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন সাংবাদিক সমাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল সর্বাধিক এবং সর্বমহলে। গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার রক্ষার জন্য সবসময় কাজ করেছেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংবাদ প্রকাশ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সবসময় কথা বলেছেন।
হারুন জামিল বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে রুহুল আমীন গাজীর ওপর অন্যায় করা হয়েছে। তাকে কারারুদ্ধ করে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
খুরশীদ আলম বলেন, রুহুল আমীন গাজী দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের গণমাধ্যম জগতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের জন্য লড়াই করেছেন। এইসঙ্গে গণমাধ্যমের ওপর সরকারের চাপ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির পক্ষেও সবসময় সরব ছিলেন তিনি।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ
















