ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Newbd24.com
শিরোনাম ::
৪ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কার্গো ভিলেজের আগুন জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা : প্রধান উপদেষ্টা মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কাজ হারাবেন ২ লক্ষাধিক জেলে আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে ঢুকেছি: শেষ জাহাজ আটকের আগে ভিডিও বার্তায় শহিদুল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের নিন্দায় বাংলাদেশ ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৬০ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে তীব্র যানজট প্রতিশোধ নিলে আমার ওপর নিন, কর্মীদের ছুঁবেন না’ : থালাপতি বিজয় প্যারিস ফ্যাশন উইকে আলোচনায় ঐশ্বরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি দপ্তরে শাটডাউন, ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে লাখো কর্মী

মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কাজ হারাবেন ২ লক্ষাধিক জেলে

স্টাফ রিপোর্টার : ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ২২ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ নিষেধাজ্ঞায় কর্মহীন হয়ে পড়বেন দুই লাখেরও বেশি জেলে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নিবন্ধিত প্রতিটি জেলেকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। তবে জেলেরা বলছেন, বরাদ্দ চাল যেন দ্রুত বিতরণ করা হয়।

ভোলার বিভিন্ন মাছঘাট ও জেলে পল্লীতে ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। মৌসুমের শুরুতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় অনেকেই ঋণ শোধ করতে পারেননি। তার ওপর মাছ ধরা বন্ধ হওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে।

জেলে বশির ও সিরাজ মাঝি জানান, চলতি মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে হতাশা ছিল। কয়েকদিন ধরে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করায় আশা জেগেছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শুরুর কারণে আবারও হতাশায় পড়েছি।

এদিকে নিষেধাজ্ঞার খবরে নৌকা-ট্রলার ঘাটে বেঁধে রেখেছেন জেলেরা। কেউ কেউ শেষবারের মতো নদীতে জাল ফেললেও রাত ১২টার মধ্যেই তাদের ফিরতে হবে। অনেকে আগেই জাল-নৌকাসহ সরঞ্জাম ঘাটে তুলে এনেছেন।

ইলিশা এলাকার জেলে লোকমান হোসেন বলেন, মাছ ধরা বন্ধ, তাই জাল-নৌকা তীরে এনেছি। সরকার যে চাল দেবে তা যেন দ্রুত বিতরণ করা হয়।

জেলে বরিউল বলেন, এ মৌসুমে মাছ পাইনি, ঋণ শোধ করতে পারিনি। এখন আবার মাছ ধরা বন্ধ থাকায় নতুন সংকটে পড়েছি।

ভোলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার হলেও বরাদ্দ চাল পাবেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৮ জন। তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৫ মেট্রিক টন চাল। ফলে নিবন্ধিত হয়েও প্রায় ১০ হাজার জেলে চাল থেকে বঞ্চিত হবেন

ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদি হাসান ভূঁইয়া জানান, জেলেদের জন্য বরাদ্দ চাল এক সপ্তাহের মধ্যেই বিতরণ করা হবে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তাদের সচেতন করতে সভা-সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিযান সফল করতে পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে মাঠে থাকবে।

জেলেদের অভিযোগ, ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় তারা দেনার দায়ে জর্জরিত। তার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় এবার কঠোর অভিযান পরিচালিত হবে এবং নিবন্ধিত প্রতিটি জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

৪ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কার্গো ভিলেজের আগুন

মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কাজ হারাবেন ২ লক্ষাধিক জেলে

আপডেট সময় ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার : ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ২২ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ নিষেধাজ্ঞায় কর্মহীন হয়ে পড়বেন দুই লাখেরও বেশি জেলে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নিবন্ধিত প্রতিটি জেলেকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। তবে জেলেরা বলছেন, বরাদ্দ চাল যেন দ্রুত বিতরণ করা হয়।

ভোলার বিভিন্ন মাছঘাট ও জেলে পল্লীতে ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। মৌসুমের শুরুতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় অনেকেই ঋণ শোধ করতে পারেননি। তার ওপর মাছ ধরা বন্ধ হওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে।

জেলে বশির ও সিরাজ মাঝি জানান, চলতি মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে হতাশা ছিল। কয়েকদিন ধরে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করায় আশা জেগেছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শুরুর কারণে আবারও হতাশায় পড়েছি।

এদিকে নিষেধাজ্ঞার খবরে নৌকা-ট্রলার ঘাটে বেঁধে রেখেছেন জেলেরা। কেউ কেউ শেষবারের মতো নদীতে জাল ফেললেও রাত ১২টার মধ্যেই তাদের ফিরতে হবে। অনেকে আগেই জাল-নৌকাসহ সরঞ্জাম ঘাটে তুলে এনেছেন।

ইলিশা এলাকার জেলে লোকমান হোসেন বলেন, মাছ ধরা বন্ধ, তাই জাল-নৌকা তীরে এনেছি। সরকার যে চাল দেবে তা যেন দ্রুত বিতরণ করা হয়।

জেলে বরিউল বলেন, এ মৌসুমে মাছ পাইনি, ঋণ শোধ করতে পারিনি। এখন আবার মাছ ধরা বন্ধ থাকায় নতুন সংকটে পড়েছি।

ভোলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার হলেও বরাদ্দ চাল পাবেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৮ জন। তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৫ মেট্রিক টন চাল। ফলে নিবন্ধিত হয়েও প্রায় ১০ হাজার জেলে চাল থেকে বঞ্চিত হবেন

ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদি হাসান ভূঁইয়া জানান, জেলেদের জন্য বরাদ্দ চাল এক সপ্তাহের মধ্যেই বিতরণ করা হবে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তাদের সচেতন করতে সভা-সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিযান সফল করতে পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে মাঠে থাকবে।

জেলেদের অভিযোগ, ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় তারা দেনার দায়ে জর্জরিত। তার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় এবার কঠোর অভিযান পরিচালিত হবে এবং নিবন্ধিত প্রতিটি জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।