ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Newbd24.com

সাংবাদিকের ওপর ক্ষোভ কেন

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গত আগস্ট মাসে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের প্রতিবেদক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে। পরে সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ঈদগাঁ মার্কেটের নিচতলায় একটি কাপড়ের দোকানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পেছন থেকে এক নারীকে ধাক্কা দেয় এক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পেছন থেকে অস্ত্র নিয়ে ওই ব্যক্তির ওপর হামলা চালায় কয়েক জন যুবক। সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের শৈবাল পয়েন্ট এলাকায় ঝাউবাগানের একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক সংবাদকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি সাংবাদিক আমিন উল্লাহ। তিনি জাতীয় দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ পত্রিকার উখিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এলাকাবাসী জানান, আমিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি করতেন। পাশাপাশি লেখালেখি করতেন এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ফেসবুকে সক্রিয় ছিলেন। স্থানীয়ভাবে তার সঙ্গে কারও বড় কোনও ঝামেলা বা শত্রুতা ছিল— এমন তথ্য জানা যায়নি। তবে অপর একটি সূত্র সংবাদকর্মীদের কাছে দাবি করে, ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করায় কিছু দুর্বৃত্ত তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।সেপ্টেম্বর ঢাকায় আদালতে আরেকটি ঘটনা ঘটে। সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন শুনানিতে কর্তব্যরত সাংবাদিকরা আইনজীবীদের হামলার শিকার হন। উপস্থিত অন্য সংবাদকর্মীরা বলেন, সাংবাদিক মুক্তাদির রশীদ এজলাসে পান্নার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে বের হয়ে যেতে ধমকাতে থাকেন আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহী। এ সময় মুক্তাদির রশীদ বলেন, ‘আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা কেবলমাত্র বিচারকের আছে। তিনি বললে বের হয়ে যাবো। তাকে বলতে দিন।’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ওই আইনজীবী মুক্তাদিরকে মারতে উদ্ধত হন। তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন পাশে সাংবাদিক আসিফ মোহাম্মদ সিয়াম। এরপর আইনজীবীদের হামলায় সময় টিভির সাংবাদিক সিয়াম আহত হন। একের পর এক পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বা পেশাগত কাজের বিপরীতে শত্রুতা তৈরি হওয়ায় হত্যা, নির্যাতন ও মবের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। এছাড়াও আছে, মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। ঘটনার ধারাবাহিকতায় বারবার যে প্রশ্ন সামনে আসছে তাহলো– সাংবাদিকের ওপর এত রাগ বা ক্ষোভের কারণ কী। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা পূরণ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক উদ্বেগের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) মানবাধিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট মাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ৩৩টি ঘটনায় ৯৬ সাংবাদিক নানাভাবে হামলা, আইনি হয়রানি, হুমকি, হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আগস্টে আক্রান্ত সাংবাদিকদের সংখ্যা জুলাই মাসের তুলনায় প্রায় তিন গুণ। আর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে চলতি বছর বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘১৩ জন সাংবাদিক গ্রেফতার আছেন। তারা যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাদের বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু আজ সাত-আট মাস ধরে কারাগারে, তারা জামিন পাচ্ছেন না। তাদের আইনি কোনও প্রক্রিয়া চলছে না। বিচার হচ্ছে না। তাহলে এটা কি চলতে থাকবে? মামলার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন মামলার যে প্রবণতা, তাতে ১০০, ৫০ বা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা; তার মধ্যে একজন সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। কেন পেশাগত কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা এ ধরনের হয়রানি ও রাগের শিকার হচ্ছেন, জানতে চাইলে মানবাধিকারকর্মী ও গবেষক রেজাউর রহমান লেনিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শেখ হাসিনার আমলে সাংবাদিকরা ব্যাপক মামলা-হামলার শিকার হন। তথ্য বলছে, শেখ হাসিনার শেষ সময়ে ৫০০ মতো সাংবাদিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। এদিকে, চলতি বছরে তথ্য বলছে— অন্তত ১২৬ সাংবাদিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন এবং এর মধ্যে এক নারী সাংবাদিক সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেও পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে। সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধোরের ঘটনা, দুর্নীতি উন্মোচন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। সরকারের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক উদ্বেগের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করা দরকার সেটি হলো— সাংবাদিকদের সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কাজ করা। যে ধরনের মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় সাংবাদিকরা আটক রয়েছেন, আইনি পরিসরে যাদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেটি অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। সেটি যদি করতে না পারা যায়, তাহলে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যে অপরাধ শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতা ইউনূস সরকারও অব্যাহত রাখছেন ধরে নিতে হবে। অচিরেই মামলা-হামলা বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সাংবাদিক বা গণমাধ্যমে যেন কোনোভাবেই মব সৃষ্টির শিকার না হন, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যত দ্রুত এটি বন্ধ হবে, বাংলাদেশের মানবাধিকার ও আইনি শাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের যে ভীত তা আরও মজবুত হবে। কেন সাংবাদিকদের ওপর এত ক্ষোভ প্রশ্নে মানবাধিকারকর্মী নূর খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাংবাদিকতা সমাজের প্রতিচ্ছবি। সমাজকে বুঝতে হলে সাংবাতিকতাকে, সংবাদকে বুঝতে হবে। বর্তমান অস্থিরতায় এমনটা হওয়ারই কথা। মবসন্ত্রাস, আইনশৃঙ্খলার অবনতি সব মিলিয়ে অচলায়তনের সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত মানুষ নিজেদের গন্ডিতে হিরো। আমরা নিজেদের জায়গায় সহনশীলতার পরিচয় দিই না। সেদিকটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এটা কেবল সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে নয়, সব পেশাজীবীর ক্ষেত্রেই।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

সাংবাদিকের ওপর ক্ষোভ কেন

আপডেট সময় ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গত আগস্ট মাসে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের প্রতিবেদক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে। পরে সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ঈদগাঁ মার্কেটের নিচতলায় একটি কাপড়ের দোকানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পেছন থেকে এক নারীকে ধাক্কা দেয় এক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পেছন থেকে অস্ত্র নিয়ে ওই ব্যক্তির ওপর হামলা চালায় কয়েক জন যুবক। সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের শৈবাল পয়েন্ট এলাকায় ঝাউবাগানের একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক সংবাদকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি সাংবাদিক আমিন উল্লাহ। তিনি জাতীয় দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ পত্রিকার উখিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এলাকাবাসী জানান, আমিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি করতেন। পাশাপাশি লেখালেখি করতেন এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ফেসবুকে সক্রিয় ছিলেন। স্থানীয়ভাবে তার সঙ্গে কারও বড় কোনও ঝামেলা বা শত্রুতা ছিল— এমন তথ্য জানা যায়নি। তবে অপর একটি সূত্র সংবাদকর্মীদের কাছে দাবি করে, ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করায় কিছু দুর্বৃত্ত তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।সেপ্টেম্বর ঢাকায় আদালতে আরেকটি ঘটনা ঘটে। সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন শুনানিতে কর্তব্যরত সাংবাদিকরা আইনজীবীদের হামলার শিকার হন। উপস্থিত অন্য সংবাদকর্মীরা বলেন, সাংবাদিক মুক্তাদির রশীদ এজলাসে পান্নার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে বের হয়ে যেতে ধমকাতে থাকেন আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহী। এ সময় মুক্তাদির রশীদ বলেন, ‘আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা কেবলমাত্র বিচারকের আছে। তিনি বললে বের হয়ে যাবো। তাকে বলতে দিন।’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ওই আইনজীবী মুক্তাদিরকে মারতে উদ্ধত হন। তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন পাশে সাংবাদিক আসিফ মোহাম্মদ সিয়াম। এরপর আইনজীবীদের হামলায় সময় টিভির সাংবাদিক সিয়াম আহত হন। একের পর এক পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বা পেশাগত কাজের বিপরীতে শত্রুতা তৈরি হওয়ায় হত্যা, নির্যাতন ও মবের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। এছাড়াও আছে, মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। ঘটনার ধারাবাহিকতায় বারবার যে প্রশ্ন সামনে আসছে তাহলো– সাংবাদিকের ওপর এত রাগ বা ক্ষোভের কারণ কী। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা পূরণ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক উদ্বেগের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) মানবাধিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট মাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ৩৩টি ঘটনায় ৯৬ সাংবাদিক নানাভাবে হামলা, আইনি হয়রানি, হুমকি, হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আগস্টে আক্রান্ত সাংবাদিকদের সংখ্যা জুলাই মাসের তুলনায় প্রায় তিন গুণ। আর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে চলতি বছর বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘১৩ জন সাংবাদিক গ্রেফতার আছেন। তারা যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাদের বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু আজ সাত-আট মাস ধরে কারাগারে, তারা জামিন পাচ্ছেন না। তাদের আইনি কোনও প্রক্রিয়া চলছে না। বিচার হচ্ছে না। তাহলে এটা কি চলতে থাকবে? মামলার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন মামলার যে প্রবণতা, তাতে ১০০, ৫০ বা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা; তার মধ্যে একজন সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। কেন পেশাগত কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা এ ধরনের হয়রানি ও রাগের শিকার হচ্ছেন, জানতে চাইলে মানবাধিকারকর্মী ও গবেষক রেজাউর রহমান লেনিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শেখ হাসিনার আমলে সাংবাদিকরা ব্যাপক মামলা-হামলার শিকার হন। তথ্য বলছে, শেখ হাসিনার শেষ সময়ে ৫০০ মতো সাংবাদিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। এদিকে, চলতি বছরে তথ্য বলছে— অন্তত ১২৬ সাংবাদিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন এবং এর মধ্যে এক নারী সাংবাদিক সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেও পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে। সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধোরের ঘটনা, দুর্নীতি উন্মোচন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। সরকারের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক উদ্বেগের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করা দরকার সেটি হলো— সাংবাদিকদের সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কাজ করা। যে ধরনের মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় সাংবাদিকরা আটক রয়েছেন, আইনি পরিসরে যাদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেটি অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। সেটি যদি করতে না পারা যায়, তাহলে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যে অপরাধ শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতা ইউনূস সরকারও অব্যাহত রাখছেন ধরে নিতে হবে। অচিরেই মামলা-হামলা বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সাংবাদিক বা গণমাধ্যমে যেন কোনোভাবেই মব সৃষ্টির শিকার না হন, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যত দ্রুত এটি বন্ধ হবে, বাংলাদেশের মানবাধিকার ও আইনি শাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের যে ভীত তা আরও মজবুত হবে। কেন সাংবাদিকদের ওপর এত ক্ষোভ প্রশ্নে মানবাধিকারকর্মী নূর খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাংবাদিকতা সমাজের প্রতিচ্ছবি। সমাজকে বুঝতে হলে সাংবাতিকতাকে, সংবাদকে বুঝতে হবে। বর্তমান অস্থিরতায় এমনটা হওয়ারই কথা। মবসন্ত্রাস, আইনশৃঙ্খলার অবনতি সব মিলিয়ে অচলায়তনের সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত মানুষ নিজেদের গন্ডিতে হিরো। আমরা নিজেদের জায়গায় সহনশীলতার পরিচয় দিই না। সেদিকটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এটা কেবল সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে নয়, সব পেশাজীবীর ক্ষেত্রেই।